বাংলাদেশের প্রথম সাফারি পার্ক চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের দিনদিন মন কাড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও শতবর্ষী মাদার ট্রি গর্জন।
সম্প্রতি এ পার্ক থেকে গোপনে শতবর্ষী মাদার ট্রি গর্জন গাছ বিক্রির ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তোলপাড় চলছে। ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটছে সচেতন মহলের। পার্ক রক্ষনাবেক্ষনকারীরা এ কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বলে জানা গেছে। পরে ওই গাছের একটি অংশ সমিল থেকে উদ্ধার করা হয়।
গত মঙ্গলবার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে সরেজমিনে একটি বৃহদাকার মাদার ট্রি গর্জন গাছের কাটা অংশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পার্ক সীমানার বাইরে বসবাসরত রুহুল কাদের নামের ব্যক্তি জানায়, বিগত বর্ষার সময় ঝড়ো হাওয়ায় পার্কের বৃহদাকার গর্জন গাছটি ভেঙ্গে পড়ে। গত এক সপ্তাহ আগে সাফারি পার্কের লোকজন এ গাছের নিচের কিছু অংশ রেখে অবশিষ্ট গাছটি বিক্রি করে দেয়। স্থানীয় কাছিম মাঝি নামের এক ব্যক্তি এটি কিনে নেয়। পরে পার্ক কর্তৃপক্ষ পার্শ্ববর্তী লামা উপজেলার গুলিস্তান বাজারের একটি সমিল থেকে ওই গাছের একটি অংশ উদ্ধার করেন। কিন্তু এখনো উদ্ধার হয়নি কাছিম মাঝির দেওয়া গাছ ক্রয় বাবদ টাকাগুলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলিস্তান বাজার এলাকার সমিল ম্যানেজার বলেন, সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ থেকে গাছ কিনেছে উল্লেখ করে একটি গর্জন গাছের অংশ সমিলে নিয়ে আসে কাছিম মাঝি। একইদিন পার্কের কিছু কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা মিল থেকে গাছটি আবার নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত রেঞ্জ কর্মকর্তা ভাল জানবেন।
এদিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে এবিষয়ে কিছুই জানাতে রাজি হননি। তথ্যপ্রযুক্তির নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করে এ ব্যাপারে জানার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুসন্ধানে সাফারি পার্কের পার্শবর্তী এলাকার লোকজন জানান, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে দীর্ঘদিন ধরে গাছ চুরিসহ বন্যপ্রাণী শিকার করছে পার্শ্ববর্তী হায়দারনাসী ও গুলিস্তান বাজার এলাকার একাধিক চক্র। পার্ক সীমানা এলাকায় কর্তৃপক্ষের কোনপ্রকার নজরদারি না থাকায় চলছে এ ধ্বংসযজ্ঞ।
সরেজমিনে দেখা যায় অনিয়ম-দুর্নীতিতে নির্মিত ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সীমানা দেয়ালের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ছে। নির্মাণের এক বছর শেষ না হতেই পুরো পার্ক সীমানায় প্রায় অর্ধ ডজন প্রবেশ পথ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিমত এ পথ দিয়ে প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে পার্কের উন্মুক্ত বন্যপ্রাণী ও সাফারি পার্কের মহামূল্যবান গাছ। অপরদিকে দেয়ালের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে বাহির থেকে বন্য হাতি প্রবেশের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সম্মুখ অংশ শতবর্ষী মাদার ট্রি’র অপূর্ব সমাহার। কিন্তু পার্কের শেষ সীমান্তে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বৃক্ষ বিহীন নেড়া ভূমি চোখে পড়ার মতো। এর পেছনে কারা রয়েছে! গাছ ও প্রাণী চোরদের সাথে পার্ক কর্মকর্তারা জড়িত আছে কিনা! সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-